রাশিয়ার আগ্রাসন থেকে ইউক্রেনীয়দের রক্ষা করতে যতদিন সময় লাগবে ততদিন ইউক্রেনকে সহযোগিতা করতে বদ্ধপরিকর ন্যাটো। একই সঙ্গে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশটির সশস্ত্র বাহিনীকে পশ্চিমাদের মতো একটি আধুনিক সেনাবাহিনীতে রূপান্তর করতে সহায়তা করবে।
শুক্রবার সামরিক জোটটির মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ এই ঘোষণা দিয়েছেন।
আগামী সপ্তাহে রোমানিয়ায় ন্যাটোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই ঘোষণা দেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম পৌঁছেছে ইউক্রেনের সাড়ে ৫২ হাজার টন গম
সংগঠন হিসেবে ন্যাটো অস্ত্র সরবরাহ করে না উল্লেখ করে ইউক্রেনকে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং অন্যান্য অস্ত্র সরবরাহ চালিয়ে যাওয়ার জন্য এককভাবে বা দলগতভাবে দেশগুলোর প্রতি অনুরোধ করেছেন স্টলটেনবার্গ।
তিনি বলেন, ‘যতদিন লাগবে ইউক্রেনের পাশে থাকবে ন্যাটো। আমরা পিছপা হবো না। বলেছেন নরওয়ের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। ‘মিত্ররা অভূতপূর্ব সামরিক সহায়তা দিয়েছে এবং আমি আশা করি পররাষ্ট্রমন্ত্রীরাও অ-প্রাণঘাতী সমর্থন বাড়াতে সম্মত হবেন।’
স্টলটেনবার্গ বলেছিলেন যে ৩০ জাতির নিরাপত্তা সংস্থার সদস্যরা জ্বালানি, জেনারেটর, চিকিৎসা সরবরাহ, শীতকালীন সরঞ্জাম এবং ড্রোন জ্যামিং ডিভাইস সরবরাহ করছে। তবে শীতকাল শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও বেশি প্রয়োজন হবে। বিশেষত রাশিয়া ইউক্রেনের শক্তি অবকাঠামোতে আক্রমণ করার কারণে।
তিনি বলেন, ‘বুখারেস্টে আমাদের বৈঠকে আমি আরও কিছু করার জন্য ডাকব।’ ‘দীর্ঘ মেয়াদে আমরা ইউক্রেনকে সোভিয়েত যুগের সরঞ্জাম থেকে আধুনিক ন্যাটোর মান, মতবাদ এবং প্রশিক্ষণে রূপান্তর করতে সহায়তা করব।’
স্টলটেনবার্গ বলেছিলেন যে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা তার দেশের সবচেয়ে চাপের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করতে মন্ত্রীদের সঙ্গে যোগ দেবেন, তবে ন্যাটো কী ধরনের দীর্ঘমেয়াদী সহায়তা প্রদান করতে পারে। ন্যাটোর শীর্ষ বেসামরিক কর্মকর্তা বলেছেন যে সহায়তা ইউক্রেনকে একদিন জোটে যোগদানের দিকে এগিয়ে যেতে সহায়তা করবে।
বুখারেস্টে ২৯ ও ৩০ নভেম্বরের বৈঠকটি ন্যাটো প্রতিশ্রুতি দেয়ার প্রায় ১৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে যে ইউক্রেন এবং জর্জিয়া একদিন এই সংস্থার সদস্য হবে। আর এই অঙ্গীকারটি রাশিয়াকে গভীরভাবে ক্ষুব্ধ করেছিল।
বসনিয়া, জর্জিয়া এবং মলদোভার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরাও বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন - তিনটি অংশীদার যে ন্যাটো বলছে রাশিয়ার চাপ বাড়ছে৷
স্টলটেনবার্গ বলেন, 'বৈঠকটি দেখতে পাবে ন্যাটো `তাদের স্বাধীনতা রক্ষা করতে এবং তাদের আত্মরক্ষার ক্ষমতা জোরদার করতে সাহায্য করার জন্য আরও পদক্ষেপ নেবে।‘
প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ১০ মাস আগে ন্যাটো প্রতিবেশী ইউক্রেনে আক্রমণের নির্দেশ দিয়েছে ও রাশিয়ার প্রতিরক্ষাকে শক্তিশালী করেছে। কিন্তু একটি বড় পারমাণবিক শক্তির সঙ্গে বৃহত্তর যুদ্ধে জড়ানো এড়াতে সতর্কতার সঙ্গে চেষ্টা করেছে ন্যাটো। তবে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনায় যেতে ইউক্রেনের ওপর কোন চাপ দেননি স্টলটেনবার্গ। প্রকৃতপক্ষে ন্যাটো এবং ইউরোপীয় কূটনীতিকরা বলেছেন যে পুতিন আলোচনার টেবিলে আসতে ইচ্ছুক বলে মনে হচ্ছে না।
তিনি বলেন, ‘বেশিরভাগ যুদ্ধই আলোচনার মাধ্যমে শেষ হয়।’ তবে আলোচনার টেবিলে কী হবে তা নির্ভর করে যুদ্ধক্ষেত্রে কী ঘটবে তার ওপর।
অতএব, শান্তিপূর্ণ সমাধানের সম্ভাবনা বাড়ানোর সর্বোত্তম উপায় হলো ইউক্রেনকে সহায়তা করা।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প বিলম্ব: মন্ত্রী
রুশ রাষ্ট্রদূত আশা করছেন শিগগিরই ইউক্রেনে যুদ্ধ শেষ হবে: তথ্যমন্ত্রী